শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
জিটিবি নিউজ টুয়েন্টিফোর : কালী পুজো সাধারণত অমাবস্যা তিথিতে সম্পন্ন করা হয়| ১৮ শতকে নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই পুজো শুরু করেন| এর পর ১৯ শতক থেকে এই পুজো বহুল প্রচলিত হয়| সবার কাছে এই পুজো শব্দবাজি এবং আলোর রোশনাইয়ের পুজো| পুজোয় আনন্দ করার সাথে সাথে এই পুজোর বিধি বা নিয়ম সম্পর্কেও জেনে নিন
দেবী মূর্তির একটি পা মহাদেবের বুকের ওপর থাকে, এক হাতে অসুরের ছিন্ন মস্তক ও অন্য হাতে খড়গ| এবং দেবীর গলায় থাকে নরমুন্ডের মালা| তবে অনেক ক্ষেত্রে কালী দোয়াত দেবী মূর্তির পরিবর্তে দেবী ভগবতী রূপে বন্দনা করা হয়|
পুজো শুরু করার আগে লেখনি দোয়াত বা কালী দোয়াতটি পুজোর আসনে বসাতে হয়। অনামিকা অঙ্গুলি দিয়ে লেখনি দোয়াতগুলিতে স্বস্তিক অঙ্কন করতে হয় এবং এর জন্য লাল চন্দনবাটা ব্যবহার করতে হয়।
স্বস্তিক অঙ্কন সমাপ্ত হলে কালী পুজো শুরু করা হয়। বহুল আয়োজন বা ভোগ নয়, দেবী কালী শুধু জবা ফুলেই সন্তুষ্ট হন। সোমরস এই পুজোয় প্রধান ভোগ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মধ্যরাতে পুজো শুরু হয় এবং সাধারণত ভোর রাতে এই পুজো সম্পন্ন হয়।
কালী পুজো অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সঠিক বিধি মেনে করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সাধারণত ধ্যান, দেবীর আবাহন, পুষ্পাঞ্জলি দ্বারা এই পুজোর বিধি সম্পন্ন হয়।
দেবী ভগবতীমূর্তি বা লেখনি দোয়াত ঠিক মত প্রতিস্থাপন করা হলে ধ্যান দ্বারা এই পুজো শুরু করা হয়। একনিষ্ঠ ধ্যান এবং বিশেষ মন্ত্র উচ্চারণ দ্বারা দেবীর ধ্যান করা হয়।
ধ্যান সম্পন্ন হলে দেবী ভগবতী বা দেবী কালীর আবাহন শুরু হয়| এক্ষেত্রে হাতের একটি বিশেষ মুদ্রা এবং মন্ত্র উচ্চারণ করে দেবীর আবাহন করা হয়ে থাকে| দুটি হাত জোড় করে প্রনামের ভঙ্গিটি করে বুড়ো আঙুলটিকে ভেতরের দিকে রেখে এই বিশেষ মুদ্রাটি করা হয়ে থাকে|
দুটি হাত জোড় করে প্রনামের ভঙ্গিটি করে বুড়ো আঙুলটিকে ভেতরের দিকে রেখে এই বিশেষ মুদ্রাটি করা হয়ে থাকে। দেবী বন্দনায় বিভিন্ন মুদ্রা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রতিটি মুদ্রার আলাদা আলাদা অর্থ আছে। এই আবাহন দ্বারা দেবী মূর্তিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়ে থাক।
প্রথমে ধ্যান এবং আবাহন দ্বারা দেবীর প্রাণ প্রতিষ্ঠা হলে দেবী কালীকে তুষ্ট করার জন্য পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পাঁচটি লাল জবা ফুল দেবীর চরণে অর্পণ করা হয় একটি বিশেষ মন্ত্রের উচ্চারণে। এরপর একে একে চন্দন, পুষ্প, দীপ, ধূপ ও নৈবেদ্য দ্বারা দেবী বন্দনা করা হয়ে থাকে।
প্রতিটি ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা মুদ্রা ও মন্ত্র উচ্চারণ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ| এরপর একে একে গন্ধ, অক্ষত এবং পুষ্প বাঁ হাত দিয়ে তুলে ডান হস্ত দ্বারা দেবীর চরণে অর্পণ করা হয়ে থাকে এবং নির্দিষ্ট মন্ত্র পাঠ করা হয়ে থাকে
পুজো গ্রহণ করা হেতু দেবী ভগবতী বা দেবী কালীকে বারংবার প্রনাম জানানো হয়ে থাকে।
নারীশক্তির স্বরূপ দেবী ভগবতী সমাজের অনিষ্টকারী শক্তিকে বিনষ্ট করে আমাদের অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখান। তাই আমরাও আলো, বাজি এবং অপার ভক্তি ও শ্রদ্ধার সাথে এই পুজোয় সম্মিলিত হয়ে থাকি।